ইন্দোনেশিয়ায় আটকৃত ইরানি সুপারট্যাঙ্কার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

প্রকাশিত: ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২১
লাইট হাউজ ফাইল ফোটো

মেরিটাইম ডেস্ক :   ইন্দোনেশিয়ায় আটকৃত ইরানি সুপারট্যাঙ্কার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে ইন্দোনেশিয়ান কতৃপক্ষ। শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ বলেন যে, গত মাসে সন্দেহভাজন অবৈধ তেল স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে দেশটির জলসীমায় জব্দ করা দুটি জাহাজের মধ্যে একটি ইরানি সুপারট্যাঙ্কারে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ পাওয়া গেছে।

জাহাজের মধ্যে অবৈধ জ্বালানী স্থানান্তরের সন্দেহের জের ধরে ইরানী পতাকাবাহী এমটি হর্স এবং পানামা পতাকাবাহী এমটি ফ্রেয়াকে ২৪শে জানুয়ারী দক্ষিণ চীন সাগরের দক্ষিণ কালিমানতান প্রদেশের পন্থিয়ানাকের জলসীমায় মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সি (বাকমলা) আটক করেছিল।

তেল দ্বারা সমুদ্র দূষন করা, ইনোসেন্ট প্যাসেজ অধিকার লঙ্ঘন, তাদের শনাক্তকরণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া, অবৈধ নোঙ্গর করা এবং তাদের জাতীয় পতাকা উওলন না করার অভিযোগে তাদরকে আটক করা হয়েছিল।

২৬ ফেব্রুয়ারী গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায় যে, তারা ইরানি ট্যাংকারটিতে অস্ত্রও পেয়েছে।

বাকমলার মুখপাত্র কর্নেল উইসনু প্রমন্দিতা বলেন, তদন্তকারীরা ইরানী ট্যাংকার এমটি হর্স জাহাজ থেকে একটি স্নিপার রাইফেল, তিনটি অ্যাসল্ট রাইফেল, দুটি পিস্তল এবং গুলি উদ্ধার করেন।

এর আগে শুক্রবার, রাজনৈতিক ও সুরক্ষা বিষয়ক সমন্বয়কারী মন্ত্রী মাহফুদ এমডি বাকমলার সাথে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময় অন্যান্য সমস্ত সন্দেহের বিষয়টিও নিশ্চিত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরোও বলা হয় যে, অপরাধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই সমস্ত লঙ্ঘন করেছে, এবং তারা এগুলি সামলে ফেলতে গিয়ে ধরা পড়েছিল।

বাকমলার চিফ ভাইস অ্যাডমিরাল অ্যান করনিয়া সাংবাদিকদের জানায়, ট্যাঙ্কার দু’টি ইন্দোনেশিয়ার আঞ্চলিক জলসীমার ২৫ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে এ অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালানো অবস্থায় মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সির হাতে ধরা পরে।

আটকের বর্ননা

একটি টহলবাহী জাহাজে নিষ্ক্রিয় সিগন্যাল নির্দেশ দেয়ার পরে জাহাজগুলির স্বয়ংক্রিয় শনাক্তকরণ সিস্টেমটি বন্ধ ছিল বলে বুঝতে পারেন তারা। অতঃপর সিগন্যালটি সনাক্ত করে ট্যাঙ্কারগুলিকে জদ্ধ করা হয়েছিল।

বকামালার কর্মীরা লোকেশনে পৌঁছে তারা এমটি হর্স ও এমটি ফ্রেইয়ায়কে জাহাজ থেকে জাহাজে জ্বালানী স্থানান্তর করাকালীন সময় ট্যাঙ্কারগুলিকে ধরে ফেলে।

তখন তারা তাদের পরিচয় গোপন করে এবং তাদের ট্যাঙ্কক গুলো বন্ধ করে দেয় বলে জানান বকামালার কর্মীরা।

জব্দ হওয়ার পর থেকেই জাহাজগুলো সিঙ্গাপুরের নিকটবর্তী রিয়া দ্বীপপুঞ্জের বাতামে বাকামলার বেসে নোঙরে আছে।

তদন্তকারীরা এখনও এমটি হর্স থেকে ২৫ জন নাবিক এবং এমটি ফ্রেইয়ার থেকে ৩৬ জন চীনা নাবিক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, যা একটি সাংহাই-ভিত্তিক সংস্থা দ্বারা পরিচালিত।

রাজনৈতিক ও সুরক্ষা বিষয়ক উপ-সমন্বয়মন্ত্রী সুজেং পূর্ণোমো বলেছেন, মামলার তদন্তকারী আন্তঃ বিভাগীয় টাস্কফোর্স শীঘ্রই সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ চাপবে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহণমন্ত্রী বুদি কারিয়া সুমাদি দেশের জলাশয়গুলিতে কঠোর আইন প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আদিতা ইরাবতী।

ইন্দোনেশিয়ায় আটকৃত ইরানি সুপারট্যাঙ্কার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার ওঅবৈধ তেল পাচারের  ঘটনার পর ইরাবতী বলেন, তারা আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন দ্বারা প্রয়োগ করা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইন্দোনেশিয়ার আঞ্চলিক জলের উপর আইন প্রয়োগ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরোও পড়ুন…

অবৈধ তেল পাচারে ইরানি ও চিনা ট্যাংকার জব্দ ইন্দোনেশিয়ার