কাঁঠালবাড়ি ঘাটে বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংঘর্ষে ২৬ জন নিহত

প্রকাশিত: ৩:১০ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২১
লাইট হাউজ ফাইল ফোটো

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংঘর্ষে ২৬ জন নিহত । মাদারীপুরের শিবচরে, পদ্মার পুরাতন কাঁঠালবাড়ি ঘাটের কাছে নোঙর করে রাখা বালুবোঝাই বাল্কহেডে যাত্রীবাহী স্পিডবোটের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

স্পিডবোটটি গতকাল ভোর সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে  আনুমানিক ২৮ জন বা তার বেশি যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলা বাজারের দিকে যাচ্ছিল বলে জানা যায়।

কাঠালবাড়ি ঘাটে পৌছাতেই এর কাছে নোঙ্গর করা বালু বোঝাই একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায় বেপরোয়া গতির এই স্পিড বোটটি।

কয়েকজন সাঁতার কেটে তীরে উঠলেও বেশিরভাগ যাত্রী ডুবে যায় এবং স্পিডবোটটি বিধ্বস্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিহতদের লাশ ও ৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন।

আহতদের  চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান উদ্বার কর্মীরা।

নিখোঁজদের সন্ধানে বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় এবং এ পর্যন্ত ২৬ জনের মরাদেহ উদ্ধার করেন তারা।

নিহত ২৬ জনের মধ্যে ৩ জন শিশু ও একজন মহিলা  এবং জীবিত পাঁচজনের মধ্যে দুজন মহিলা ও একজন শিশু বলে জানান নৌ পুলিশ কর্মকর্তা।

উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত আছে এবং সময় যত যাচ্ছে লাশের হার ততই বাড়ছে।

স্বাস্থ্যবিধি ও নজরদারি ছাড়াই সর্বাত্মক লকডাউনেও গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে বেপরোয়া গতির অবৈধ এই স্পিড বোটগুলি।

স্পিডবোট গুলো ধারণক্ষমতার চাইতেও বেশি যাত্রী নিয়ে নদীতে চলাচল করে বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীরা।

নৌ-পুলিশের তথ্যমতে ২০১৯ সাল থেকে সাতটি দুর্ঘটনায় অন্তত  ৩৭ জন মারা গেছেন।

২০১৯ সালে ১৩ই আগস্ট নৌ দুর্ঘটনায় ঢাকার মিরপুরের নিখোঁজ দ্বীনইসলামের সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি।

শিমুলিয়া বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া মাঝিকান্দি রুটে স্পিডবোটের এমন বেপরোয়া চলাচলে ক্ষুব্দ সাধারণ মানুষ।

চালকের কোন রকম প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্পিডবোট গুলো ইচ্ছে মতো চলছে পদ্মায়।

এ প্রসঙ্গে মালিক সমিতি, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

এদিকে  বিআইডব্লিউটিএ’র  চেয়ারম্যানের দাবি রেজিস্ট্রেশনবিহীন স্পিড বোট গুলো চলছে অবৈধ ভাবে তাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।

তদন্ত 

এই দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য বিআইডব্লিটিএ এবং ডিজি শিপিং এর সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহান এবং ডিজি শিপিং এর কমোডর জালাল সহ আরো তিনজন ঘটনাস্থলটি পর্যবেক্ষণ করেন।

দুর্ঘটনাকবলিত স্পিডবোট এবং বাল্কহেড  দুটি নৌযানই অবৈধ বলে জানায় ডিজি শিপিং।

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন অবৈধ  নৌযান এবং এই দুর্ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের পক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোঙ্গর করা  বাল্কহেড শাফিন সায়হান জাহাজ সহ কর্মরত দুজনকে আটক করা হয় এবং একজন দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে জানান নৌ পুলিশ কমিটি।

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংঘর্ষে ২৬ জন নিহত

আরো পড়ুন…

জরুরী অক্সিজেন বহনকারী জাহাজের জন্য ভারতের পোর্ট ফি প্রত্যাখ্যান