Recognition of key-worker, demand for receiving the Covid-19 vaccine and freeing sailors from international travel restrictions

কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক কোভিড-১৯ টীকা প্রাপ্তি এবং নাবিকদের আন্তর্জাতিক ভাবে চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতা মুক্ত রাখার দাবী

প্রকাশিত: ২:০৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২১
লাইট হাউজ ফাইল ফোটো

“সী-ফ্যায়ারার্স ডে তে নাবিকদের সুষ্ঠু ভবিষ্যত নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক কোভিড-১৯ টীকা প্রাপ্তি এবং নাবিকদের আন্তর্জাতিক ভাবে চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতা মুক্ত রাখার দাবী ।”

সুদীর্ঘকাল থেকে বিশ্ববাণিজ্যে আমাদানি রপ্তানির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে সমূদ্র পথে জাহাজে পন্যসামগ্রী পরিবহন করে চলছে নাবিকগন।
সমীক্ষানুযায়ী,বর্তমানে বিশ্বের প্রায় আশি শতাংশ পন্য সমূদ্রপথে আমদানি- রপ্তানি হচ্ছে। প্রায় ৫৬০০০ সমূদ্রগামী জাহাজে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আর,বিশ্বব্যাপী জাহাজে করে পন্য পরিবহনের এই গুরুত্বপূর্ন কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন নাবিক। সমূদ্র পথে নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে, একদেশের পন্য অন্য দেশে সুনিপুণ ভাবে পরিবহন করে নিয়ে আসছে এই নাবিকগন।
বিরতিহীন ভাবে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে চলছে নাবিকেরা। বরাবরই,নাবিকের এই আত্মত্যাগের কথা পর্দার আড়ালে রয়ে যায়।
নাবিকের এই আত্মত্যাগ কে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপি ২০১১ সাল থেকে প্রতিবছর ২৫শে জুনকে সী-ফ্যায়ারার্স ডে হিসেবে পালন করার সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যার নেতৃত্বে রয়েছে নৌ পরিবহনের সর্বোচ্চ সংস্থা আই,এম,ও
প্রতিবছর বিভিন্ন প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। অতি সংগত কারণে, গত দুই বছর ধরে এই দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং এর পেছনে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর অন্যতম ভিক্টিম হলো এই নাবিক গন।পুরো পৃথিবী ব্যাপি যখন লকডাউন , তখন ও কিন্তু পন্য পরিবহন চলছে তার নিজস্ব গতিতে।
কারণ, অতি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী হতে শুরু করে মানুষের বেশিরভাগ প্রয়োজনীয় সামগ্রী জাহাজে করেই আমদানি, রপ্তানি হয়ে থাকে।
স্বভাবতই এই কাজে নিয়োজিত নাবিক গন সরাসরি সম্মুখ সারীতে থেকে ঝুকিপূর্ণ কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে।
নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সাথে।বিশ্ববানিজ্য সচল রাখার স্বার্থে নিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েছে, বিভিন্ন দেশের নানারকম কড়া নিয়ম মেনে নিয়েছে, পন্য পরিবহনের কাজে অন্যের সংস্পর্শে গিয়েছে, গুরুত্বপূর্ন সময়ে পরিবারের পাশে থাকার কথা ভুলে গিয়েছে,যাতায়তের বিধিনিষেধের কারণে কন্ট্রাক্ট শেষ হওয়ার পর ও দীর্ঘদিন সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে, নিজেদের একটু বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম শোর লিভ সুবিধার কথাও ভুলে গিয়েছে।
অত্যন্ত দূঃখের বিষয় নাবিকদের এই আত্মত্যাগ বরাবরই পর্দার আড়ালে রয়ে গিয়েছে।
নাবিকদের কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান করে জাহাজ থেকে অব্যাহতি এবং যোগদান কার্যক্রম কে সহজ করার জন্য আই,এম,ও থেকে বারবার অনুরোধ করা হলে ও বিভিন্ন দেশ এতে কর্ণপাত করেনি।এখনো বিভিন্নভাবে হয়রানি হতে হচ্ছে নাবিকদের।
পরিতাপের বিষয়,আমাদের দেশে ও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি তে নাবিকদের সুবিধার্তে চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো উদ্যোগ এখনো পর্যন্ত গৃহিত হয়নি।
যেটা পরিলক্ষিত হয়েছে কোভিড-১৯ টীকা প্রাপ্তির লিস্টে, যেখানে নাবিকদের জন্য কোনো টীকা বরাদ্দ করা হয়নি।
এছাড়া, বিভিন্ন সময়ে নাবিকেরা জাহাজে যোগদান বা অব্যাহতির ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হয়েছে এবং এই বিষয়ে চলাচল নিষেধাজ্ঞার সময়ে নাবিকদের কী-ওয়ার্কার উল্লেখ করে আওতা মুক্ত রাখার জন্য কেনো পদক্ষেপও গ্রহন করা হয়নি।এবছর সী-ফ্যায়ারার্স ডে এর প্রতিপাদ্য বিষয় হলো নাবিকদের সুষ্ঠু ভবিষ্যৎ।
নাবিকদের সুষ্ঠু ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এবং বিশ্ব বানিজ্য সচল রাখার লক্ষ্যে আমি আশা করবো বাংলাদেশ সহ প্রতিটি দেশ যেনো নাবিকদের কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক নাবিকদের জন্য কোভিড-১৯ টীকার ব্যবস্থা গ্রহন করে এবং নাবিকদের জাহাজে যোগদান এবং অব্যাহতি কার্যক্রম কে সহজ করার লক্ষ্যে নাবিকদের আন্তর্জাতিক ভাবে সকল প্রকার চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতা মুক্ত রাখে।
নিশ্চিত হোক নাবিকদের সুষ্ঠু ভবিষ্যৎ এবং সচল থাকুক বিশ্ববাণিজ্য।
কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক কোভিড-১৯ টীকা প্রাপ্তি এবং নাবিকদের আন্তর্জাতিক ভাবে চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতা মুক্ত রাখার দাবী
লেখক- মোঃ আতিক উল্লাহ খান।
চীফ অফিসার।
এক্স-ক্যাডেট মেরিন একাডেমি, ৪২-তম ব্যাচ