Global warming rises by 3 degrees; The whole world is facing a terrible catastrophe

বৈশ্বিক উষ্ণতা ৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি; ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে সারা বিশ্ব

প্রকাশিত: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০
লাইট হাউজ ফাইল ফটো

নিজস্বসংবাদদাতা :  গত ১০০ বছরে  পুরো পৃথিবীর অনেক পরিবর্তনই আমরা দেখেছি ।২০২০ সাল জুড়ে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে সারাবিশ্বে। জলবায়ু যেন  প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল, জলবায়ু সংক্রান্ত ব্যয় বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে  শুরু করে সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশে ।জলবায়ুর কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে  বহুগুণে ।বৈশ্বিক ভাবে এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বলে বিভিন্ন গবেষণা  প্রতিষ্ঠান জানায় ।গত কয়েক দশকে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি নির্মাণে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৬০ ভাগ,  বেড়েছে আবাসন ব্যয়, বেড়েছে বন্যা, ঝড়, খড়া, মহামারী আর অগ্নিকাণ্ডের মত মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ । প্রতিবছর প্রায় ৩.২ মিলিমিটার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। ২০২০ সালে মার্শাল দ্বীপে সামুদ্রিক  উচ্ছতার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্য দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জলবায়ু শরণার্থী সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।গত কয়েক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। ফসেল জ্বালানি থেকে নিঃসরিত কার্বন ডাই অক্সাইডের ৩০ ভাগ শুসে নেয় সমুদ্র ।যার ফলে সামুদ্রিক মাছ ও জীব বৈচিত্রের পরিমাণ কমে আসছে দ্রুত ।পৃথিবীর সার্বিক তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৩ থেকে ৪  শতাংশ।যার ফলে গ্রীষ্মকালে দাবদাহের  কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি,বাড়ছে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুকি।কার্বন ডাই অক্সাইডের কারণে আমাদের খাদ্য শৃংখলের উপর প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে ।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে, আমরা যে খাবার খাচ্ছি তার পুষ্টির মান।গত কয়েক বছরে ধনী-গরীবের মধ্যে বৈষম্য বেড়েছে অনেকটা।অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে আমেরিকা, প্রায় দেশে জলবায়ু  হুমকির কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা আর্থিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রায় ৭১ ভাগ গ্রীন হাউজ গ্যাস তৈরি করে ১০০ টি কোম্পানি। পরিবেশবাদী আন্দোলনের মুখে কোনভাবেই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমানো সম্ভব হচ্ছে না ।শিল্প উন্নত দেশগুলোতে কার্বন ট্যাক্স দেওয়ার কথা থাকলেও তারা খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না বিষয়টিকে।

কার্বন নিঃসরণ কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে, এ শতাব্দীতেই বৈশ্বিক উষ্ণতা ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়বে । প্যারিস জলবায়ু চুক্তির ৫ম বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত ভার্চুয়াল সম্মেলনে এমন আশঙ্কার কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। বিপর্যয় ঠেকাতে, প্রত্যেক দেশে জলবায়ু সংক্রান্ত ‘জরুরি অবস্থা জারির’ মত দেন তিনি।

বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু  চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রায় দুইশত দেশ। সেই চুক্তি কার্যকরে কোন অগ্রগতি না হলেও পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্যারিসের সিটিহলে আয়োজন করা হয়েছে  ভার্চুয়াল সম্মেলন ।আয়োজন করা হয় ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন  সামিট শীর্ষক সম্মেলন-২০২০।ভার্চুয়ালি অংশ নেয়  ৭০ টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা।জাতিসংঘের সাথে আয়জনের সহযোগী হিসেবে ছিলেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি  ও চিলি ।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিস্থিতির অবনতির উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব মনে করিয়ে দেন, প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতির কথা ।লক্ষ্য পূরণে যেসব পদক্ষেপে নেয়ার কথা ছিল,  তার খুব সামান্যই কার্যকর হয়েছে ।২০৩০ সালের মধ্যে ২০১০ এর তুলনায় কার্বন নিঃসরণ ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে ।বিশ্ব সম্প্রদায় গতিপথ না পাল্টালে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রী পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে আর এর পরিণত হবে খুবই ভয়াবহ।যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার সিদ্ধান্তকে স্বাগতম জানান গুতেরিয়াস ।

গ্রীন হাউজ গ্যাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জোড়ালো পদক্ষেপের অঙ্গীকার করেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ।তিনি বলেন, বিশ্ব কমিউনিটির অংশ হিসেবে লক্ষ্য নির্ধারণ এক বিষয় আর তা অর্জন আলাদা ।তিনি বলেন আমরা লক্ষ্য পূরণ করতে চাই ।জার্মানির অঙ্গীকার জলবায়ু খাতে দ্বিগুণ করবে বরাদ্দ এবং ২০২০ সালে চার বিলিয়ন ইউরো খরচ হবে পরিবেশ সুরক্ষায় ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করে বলেন, প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণই কেবল নয়, লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবার দিকে এগুচ্ছে ভারত।২০০৫ সালের তুলনায় নিঃসরণ মাত্রা ২১ শতাংশ কমিয়ে এনেছে ।সৌর বিদ্যুৎ সহ নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে। ২০২২ সাল নাগাদ  ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে।

জাতিসংঘ বলছে চলতি শতাব্দীতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে বার্ষিক কার্বন নির্ধারণের হার  থাকতে হবে ৭.৬ শতাংশের মধ্যে ।