Dredging agreement for handling ships at a depth of 10 meters at Mongla port

মোংলা বন্দরে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ হ্যান্ডেল করার লক্ষ্যে ড্রেজিংয়ের চুক্তি

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
লাইট হাউজ ফাইল ফটো

নিজস্বসংবাদদাতা : মোংলা বন্দরের জেটিতে স্বাভাবিক জোয়ারের সহায়তায় ৯.৫-১০ মিটার গভীরতার জাহাজ হ্যান্ডেল করার লক্ষ্যে মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ৮.৫০ মিটার গভীরতায় ড্রেজিং করা হবে। ৩০ ডিসেম্বর বুধবার মোংলা বন্দরের সভা কক্ষে বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং সংক্রান্ত একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিয়ানসু হাইহং কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন কর্পোরেশনের প্রতিনিধি ইয়াং ঝিজুম চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এই সভায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী  এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এসময় মন্ত্রণালয় থেকে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
প্রায় ৭৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ইনার বার ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন  হবে  । ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে এবং ২০২২ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে আশাবাদী কতৃপক্ষ।

চীনের প্রতিষ্ঠান জিয়ানসু হাইহং কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন  যৌথভাবে ড্রেজিংয়ের কাজটি সম্পন্ন করবে। ইনার বারে ২১৬.০৯ লক্ষ ঘন মিটার ড্রেজিং করা হবে বলে জানা যায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,  ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতিসহ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ড্রেজিং করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে বন্দরের বিভিন্ন প্রকার হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ, অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং ড্রেজিং করার জন্য নানাবিধ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় করে মোংলা বন্দরের আউটার বারে ড্রেজিং করা হয়েছে। আউটার বারে ড্রেজিংয়ের ফলে বন্দরের এ্যাংকোরেজ এলাকা পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ অনায়াসে আসতে পারে। ইতোমধ্যে ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসা শুরু করেছে। এতে করে বন্দরে আগত জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি বন্দরের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ইনার বারে ড্রেজিং সমাপ্ত হওয়ার পর বন্দরে আগত জাহাজের টার্ণ এ্যারাউন্ড টাইম কমে যাবে ত্ত পণ্য পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে এবং মোংলা বন্দর দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এতে মোংলা বন্দরে জাহাজের সংখ্যাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে, যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগর হতে প্রায় ১৩১ কিলোমিটার উজানে পশুর নদীর তীরে মোংলা বন্দর অবস্থিত। পশুর চ্যানেলের নাব্যতা সংকটের কারণে মোংলা বন্দরের জেটিতে ৭.৫ মিটারের অধিক গভীরতার জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এসব জাহাজ প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার খালাস করে ড্রাফট কমিয়ে মোংলা বন্দরে আসতে হয় এবং এতে মোংলা বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনের খরচ ও সময় বৃদ্ধি পায়। মূলত এ কারণেই কন্টেইনারাইজড মালামাল আমাদানী-রপ্তানীতে ব্যবসায়ীগণ মোংলা বন্দর ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ করে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরেও সর্বোচ্চ ৯.৫০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডেল করা হচ্ছে। সে বিবেচনায় এই ড্রেজিং করা হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে সাথে মোংলা বন্দরেও সর্বোচ্চ ৯.৫০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে এবং মোংলা বন্দরে ড্রেজিং করা হলে চট্টগ্রাম বন্দর মোংলা বন্দরের ড্রাফটের কোন পার্থক্য থাকবে না এবং মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের উপযুক্ত বিকল্প বন্দরে পরিণত হবে।