20000 ডোজ ভ্যাকসিনে রক্ষা হতে পারে মেরিনারদের আন্তর্জাতিক বাজার

প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২১
লাইট হাউজ ফাইল ফোটো

20000 ডোজ ভ্যাকসিনে রক্ষা হতে পারে মেরিনারদের আন্তর্জাতিক বাজার বলে মন্তব্য করছেন মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্সরা।

প্রত্যেক পেশাজীবীদের এক একটিমন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ স্বায়ত্তশাসিতসংস্থা/ পেশাজীবি এসোসিয়েশন থাকে,  যা সরকার কতৃক স্বীকৃত এবং সরকারী কর্মকর্তা/পেশাজীবি কতৃক পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশেও তা আছে এবং সকল পেশাজীবিরা সরকার এবং জনগণ কতৃক স্বীকৃত। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় যে, বাংলাদেশে নৌ মন্ত্রনালয়, সমুদ্রপরিবহন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন থাকলেও এদেশের নাবিকরা আজ ও পেশাজীবি হিসেবে সরকারী স্বীকৃতি পায়নি।

যদি পেশাজীবি হিসেবে সরকারী স্বীকৃতিই থাকতো তাহলে সরকারী কার্যক্রমে অবশ্যই এই পেশাকে অন্য পেশাজীবীদের সাথে তুলনামূলকভাবে উপস্থাপন করা হতো।

সরকারী প্রশাসন, সামরিক বাহিনি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনি, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রকৌশলী, আইনজীবী এমনকি দিনমজুর সহ সব পেশাজীবীদের স্বীকৃতি এবং নানাবিধ সুবিধাদি থাকলেও শুধু সীফ্যায়ারার্স বা নাবিকদের বলার মতো কোনো স্বীকৃতি এদেশে নেই।

অথচ এই নাবিকরাই এ দেশের অর্থনীতি চালিকাশক্তির বিশাল একটি অংশ। যাদের রেমিট্যান্সের কারনে প্রতি বছর এদেশের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিলে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার যোগ হচ্ছে, যে অর্থ দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ডকে বিশ্ব দরবারে  শক্তিশালী করে তুলছে,।

শুধু তাই নয় দেশের উন্নয়ন এবং মানুষের মৌলিক অধিকারকে ত্বরান্বিত করতে যেসব সামগ্রী আমদানি রপ্তানি হচ্ছে তার ৯০% পণ্য পরিবাহিত হচ্ছে সমুদ্রপথে।

যা পরিচালিত হচ্ছে এই অবহেলিত এবং নিগৃহীত নাবিক কতৃক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই স্বর্ণডিম্ব প্রসবকারী প্রজাতীদের সীফ্যায়ারার্স কোনো মূল্য এই অভাগা জাতী দিতে পারেনি

আজ এই করোনা মহামারীর ক্রান্তি লগ্নে যখন সমগ্র বিশ্ব তাদের দেশের নাবিকদেরকে কী-ওয়ার্কার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে শিপিং সেক্টরকে গতিশীল রাখার জন্য প্রথম সারিতে টিকা দেয়ার ব্যবস্থাসহ সবধরনের সহযোগীতা করছে।

উল্লেখ্য যে, প্রতিবেশী দেশ ভারত সরকার স্পেশাল ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে তাদের নাবিকদেরকে সাইন অফ করে দেশে নিয়ে আসছে, সেখানে বাংলাদেশ সরকার সীফ্যায়ারার্সদের / নাবিকদের প্রফেশনকে আমলেই আনেনি।

নাবিকদের কোনো অপশন টিকাদানের “সুরক্ষা এপস” এ রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। তবে শান্তনা এইটুকুই যে আমাদের সমুদ্রপরিবহন অধিদপ্তর গত ০৮-০৪-২০২১ তারিখে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়কে নাবিকদের ভ্যাক্সিন সুবিধা দেয়ার নিমিত্তে একটি চিঠি প্রেরণ করেছিলেন।

কী-ওয়ার্কার স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক কোভিড-১৯ টীকা প্রাপ্তি এবং নাবিকদের আন্তর্জাতিক ভাবে চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতা মুক্ত রাখার দাবী

নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় অতীব অনুগ্রহপূর্বক মাত্র ২ মাস ৯ দিন পর গত ১৭-০৬-২০২১ তারিখে অধিদপ্তরের চিঠির প্রেক্ষিতে সী-ফ্যায়ারার্সদেরকে জরুরী ভিত্তিতে টিকাদানের ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য স্বাস্থ্য সচিব বরাবর একটি চিঠি প্রেরন করেন।

আজ প্রায় ১৭ দিন হতে চলেছে সাস্থ্য মন্ত্রালয় এখনো সেই চিঠির সারমর্ম ত্বরান্বিত করতে সামর্থ হননি।

চিঠিটি হয়তোবা মাননীয় সচিবের শতশত ফাইলের নিচে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে পড়ে আছে। কবে, কখন এই অবগুন্ঠিত চিঠি আলোর মুখ দেখবে আমরা তা জানিনা।

তবে এই চিঠি আলোর মুখ দেখার আগেই আমাদের ঘর পোড়া সীফ্যায়ারার্স জ্বলন্ত পীঠ নিয়ে বেরিয়ে এসেছে তাদের ন্যায্য দাবীতে মানননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য।

যারা এযাবৎ বলে এসেছেন যে, আমাদের সীফ্যায়ারার্সদের মাঝে কোন ঐক্য নেই, তারা অবশ্যই দেখেছেন কিভাবে সব সীফ্যায়ারার্স তাদের দাবী নিয়ে একই ছাতার নিচে অবস্থান নিয়েছে?

সকল সীফ্যায়ারার্স কে অনুরোধ করবো যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই আপনার ন্যায্য দাবীকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে চেষ্টা চালিয়ে যান।

আশাকরি,বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় শীগ্রই সাপ্লাই চেইন অক্ষুণ্ণ রেখে বিশ্ব অর্থনীতিকে সচল রাখার স্বার্থে বাংলাদেশী নাবিকদের জন্য কী-ওয়ার্কার বিবেচনায় দ্রুত টীকার ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।

20000 ডোজ ভ্যাকসিনে রক্ষা হতে পারে মেরিনারদের আন্তর্জাতিক বাজার

লেখক-

ক্যাপ্টেনফিরোজ আহমেদ

মাস্টার মেরিনার