বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ইতিহাসে যোগ হলো নতুন এক প্রাপ্তি- নিউমেটিক ভেন্টিলেটর।

প্রকাশিত: ১১:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০

নিজস্ব সংবাদদাতা- পুরো পৃথিবী যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আক্রান্ত, পুরো পৃথিবী যখন স্তব্ধ, পৃথিবীর অর্থনীতি যখন অচল, মৃত্যুর মিছিল যখন ঊর্ধ্বগামী ঠিক তখনই ছয় দশকের পুরানো ঐতিহ্যবাহী, পৃথিবীর মেরিটাইম শিক্ষার আইকন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমীর, কমান্ড্যান্ট ডক্টর নৌ প্রকৌশলী সাজিদ হোসেন এর পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির নিউমেটিক-কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয়েছে সহজে ব্যবহারযোগ্য ‘নন-ইনভার্সিভ ভেন্টিলেটর’।

প্রায় 60 বছরের পুরানো প্রতিষ্ঠান পুরো পৃথিবীর মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও দক্ষ মেরিটাইম প্রফেশনাল তৈরির জন্য এই প্রতিষ্ঠানের রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত ওয়ার্কশপ ও ল্যাবরেটরিসহ যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা।

মেরিন একাডেমির প্রধান, কমান্ড্যান্ট ড. নৌ প্রকৌশলী সাজিদ হোসেনের নির্দেশনায় ল্যাব-অফিসার মু. খালেদ সালাউদ্দিন একাডেমির কন্ট্রোল ল্যাবের নিউমেটিক কন্ট্রোল টেকনোলজি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এ ভেন্টিলেটর তৈরি করেন।

খালেদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, নিউমেটিক কন্ট্রোল টেকনোলজি ব্যবহার করে বাংলাদেশে এই প্রথম নন-ইনভার্সিভ ভেন্টিলেটর তৈরি করা সম্ভব হলো। এ প্রযুক্তির বড় সুবিধা হচ্ছে এর একটি কন্ট্রোল ইউনিট দিয়ে প্রায় ৫ থেকে ৮ টি অক্সিজেন প্রেশার ইউনিট চালানো এবং সম সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা সম্ভব।

তিনি বলেন, পুরো যন্ত্রটির কন্ট্রোল অংশে সলেনয়েড কন্ট্রোল ভালব ম্যাগনেটিক সেন্সর ও টাইম-রিলে এবং প্রেশার অংশে নিউমেটিক পিস্টন-সিলিন্ডার, অক্সিজেন রিসারভার ও একটি ব্যাগ-ভালব-মাস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যাবহারের সময়ে, যন্ত্রটিতে অক্সিজেনের প্রেশার, ভলিউম ও রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের রেট নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে।

একাডেমির আর্বান ডিসপেন্সারির মেডিক্যাল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম একাডেমি উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটরটি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং যেকোনো শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাজনিত রোগীর ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে বলে মতামত দিয়েছেন।

দেশে করোনা রোগী ছাড়াও যেসব হাসপাতালে আইসিইউ/রেস্পিরেটরি সাপোর্ট নেই সেখানে কনভেনশনাল ভেন্টিলেটরের জায়গায় বিকল্প ভেন্টিলেটর হিসেবে কার্যকর হয়ে উঠতে পারে যন্ত্রটি।

কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন জানান, আপাতত এই যন্ত্রটি একাডেমির আর্বান ডিসপেন্সারিতে সম্প্রতি স্থাপিত আইসোলেশন সেন্টারে স্থাপন করা হবে।

তিনি জানান, আমাদের মেরিন একাডেমিতে ৭০০ ক্যাডেট, শিক্ষক, কর্মচারী আছেন। এ ছাড়া অনেক বছর যাবত আনোয়ারার স্থানীয় লোকজনকেও বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। তাই যন্ত্রটি আমাদের সেন্টারে রাখছি। দেশের যেকোনো কল্যাণে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি নিউমেটিক ভেন্টিলেটরের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে সর্বদা প্রস্তুত।