The pleasure boat Bay-One cruise ship is going to be launched on Chittagong to St. Martin route

চট্টগ্রাম টু সেন্টমার্টিন রুটে চালু হতে যাচ্ছে প্রমোদতরী বে-ওয়ান ক্রুজ শিপ

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২১
লাইট হাউজ ফাইল ফটো

নিজস্বসংবাদদাতা :  প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম টু সেন্টমার্টিন রুটে চালু হতে যাচ্ছে প্রমোদতরী বেওয়ান ক্রুজ শিপ। ভ্রমণপিপাসুদের সেন্টমার্টিন যেতে হলে টেকনাফের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো এত দিন। শুধুমাত্র টেকনাফ থেকেই সেন্টমার্টিন যেতে হতো সবাইকে । তবে এই বড় প্রমোদতরীটি চালু হওয়ার পর এখন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ওয়াটার বাস টার্মিনাল থেকেই যাওয়া যাবে সেন্টমার্টিনে।

২০০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৪৫০ ফুট ও প্রস্থ ৫৫ ফুট এবং জাহাজটি সর্বোচ্চ ২৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম হবে।কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স এর অর্থায়নে আমদানিকৃত জাহাজটিতে রয়েছে প্রেসিডেন্ট সুইট, বাঙ্কার বেড কেবিন, টুইন  বেড কেবিন এবং আরামদায়ক চেয়ারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আসন ।এই বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজে ১৭ জন নাবিক ছাড়াও যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকবেন আরও অতিরিক্ত ১৫০ জন ক্রু।

জাপানের মিতসুবিশি হেবি ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি করা বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজটি ১৪ ই জানুয়ারির পর থেকে বঙ্গোপসাগরে চলাচল করবে।কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে বাংলাদেশের আঙ্গিকে অভ্যন্তরীণ ডেকোরেশনে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এর ফলে দেশের ভ্রমণবিলাসী যাত্রীদের ক্ষেত্রে আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আর উত্তাল সমুদ্র মোকাবেলায় ফিন স্টেবিলাইজার সুবিধা রাখা হয়েছে জাহাজটিতে।

লাইট হাউজ ফাইল ফটো

বে-ওয়ান ক্রুজ জাহাজের ক্যাপ্টেন আলমগীর কবির বলেন, “আমার জানামতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন কার্গো জাহাজের ফিন স্টেবিলাইজারটি স্টাবলিশড করা হয়নি এবং ইন্ট্রোডিউস করা হয়নি।” তিনি বলেন,  “যখন কোন একটি জাহাজ রোলিং করতে থাকে  তখন জাহাজের এই ফিন গুলো বের করে দেওয়া হয় পাখার মত তখন জাহাজটি ব্যালেন্স মেনটেন করে এবং জাহাজটি কোনো একদিকে কাত হয়ে যাওয়াটা কে প্রতিরোধ করে।” এই স্টেবিলাইজারটি  অত্যন্ত আধুনিক জাহাজের একটি ধারণা।

বে-ওয়ান ক্রুজ জাহাজটি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে রেজিস্ট্রেশন  প্রাপ্ত হাওয়ায় আন্তর্জাতিক রুটেও চলাচলের সুযোগ রয়েছে। মেরিটাইম  ট্যুরিজম কে জনপ্রিয় করতে এই জাহাজটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানায় জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

বে-ওয়ান ক্রুজ জাহাজের সিইও ক্যাপ্টেন মাসুক বলেন, জাহাজটি বাংলাদেশ থেকে আন্দামান দ্বীপে যেতে সময় লাগবে ম্যাক্সিমাম আড়াই দিন। আমরা চেস্টা কোরব বাংলাদেশের মানুষ কে পুরো সমুদ্র টাকে চিনাতে এবং তারা যেন জ্ঞান অর্জন করতে আরো  আগ্রহী হয়। মেরিটাইম ট্যুরিজমটি বাংলাদেশের একটি অঙ্গা অঙ্গি পাঠ আর এই মেরিটাইম ট্যুরিজম কে আমরা এনসিউর করব এবং এই  জাহাজ দিয়ে মানুষ যাতে সমুদ্র টাকে ভালভাবে দেখতে  এবং সমুদ্রের রিসোর্সটাকে বুঝতে পারে।

বে-ওয়ান ক্রুজ জাহাজটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচাইতে বড় ক্রুজ শিপ এবং এতে আছে অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধা । এখন থেকে পর্যটকদের আর বিশাল সড়ক পথ পাড়ি দিয়ে  সেন্টমার্টিনে যেতে হবে না সরাসরি সমুদ্রযাত্রায় যেতে পারবে সেন্টমার্টিন।আর চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের আশা এরই মাধ্যমে পূর্ণ হবে। এ জাহাজটি প্রথমে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন রুটে চালু করা হয়েছিল।তবে কক্সবাজারে এই জাহাজটি ভিড়ানোর মতো কোন জেটি না থাকায় কক্সবাজার সাগরপাড়ে পৌঁছাতে পারতো না। তাই  এই জাহাজের  রুট পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম টু সেন্টমার্টিন করা হয়েছে।পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনালে এই জাহাজটি সহজেই দেখতে পারবে এবং এতে যাত্রীদের ভোগান্তি ও অনেকাংশে কমবে।

দ্রুতগতির জাহাজ বে-ওয়ান চালুর মাধ্যমে পর্যটকরা কম সময়ে এবং নিরাপদে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের  সুবিধা পাবেন। এতে পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে মনে করেন কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষ।  সপ্তাহে তিন দিন, রাত ১১ টায় এই ক্রুজ জাহাজ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনাল ছেড়ে যাবে এবং পরদিন সকাল ৮টায় জাহাজটি সেন্টমার্টিন গিয়ে পৌঁছবে ।এছাড়া ফিরতি পথে দুপুর ১টায় সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করবে এবং পর দিন সন্ধ্যা ৭টায় জাহাজটি চট্টগ্রাম পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছাবে।