কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে উঠলো মৃত তিনি

আবারো কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে উঠল মৃত তিমি

প্রকাশিত: ১১:৩৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১

লাইটহাউজ নিউজ ডেক্স-পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে ৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি শুশক প্রজাতির মৃত ডলফিন।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে সৈকতের তেত্রিশকানি পয়েন্টে ডলফিনটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা জানান, ডলফিনটির শরীরের উপরিভাগের চামড়া অনেকটা উঠে গেছে। এছাড়া মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালের আঘাতে প্রাণিটির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে সৈকতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর একটিসহ এবছর মোট ১৯ টি মৃত ডলফিন ভেসে আসে।
ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, দুই দিনে কুয়াকাটা সৈকতে ২টি মৃত শুশুক ও ১টি ইরাবতী ডলফিন ভেসে আসল। এর আগেও সমুদ্রসৈকতে ২০টির মতো ডলফিন ভেসে এসেছে। এগুলো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ বিষয়ে এখনই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি মৃত ডলফিন কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে। চলতি মাসেই ১১টি মৃত ডলফিন সৈকতে পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালী বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলাম জানান, মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ডলফিনটির ময়নাতদন্ত করা হবে। ঘটনাস্থলে বিট কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা সময় নিউজকে জানান, বন বিভাগের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্রসীমায় সাত প্রজাতির ডলফিনের আবাস রয়েছে। সমুদ্রের যে এলাকায় ডলফিন বিচরণ করে, সেখানে মাছের আনাগোনাও বেশি থাকে। এ কারণে জেলেরা অনেক সময় ডলফিনের গতিবিধির ওপর নজর রাখে ও সেসব এলাকায় জাল ফেলে। এতে অনেক সময় জালের ফাঁসে জড়িয়ে বা নৌযানের সোনারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডলফিনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ইদানীং কোনো কোনো দেশে প্লাস্টিক বর্জ্য খেয়ে তিমি বা ডলফিনের মৃত্যুর নজিরও দেখা গেছে।

ডলফিন রক্ষায় জেলে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই বন কর্মকর্তা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী ডলফিন হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া মৃত ডলফিনের দেহাবশেষ অবৈধভাবে কারও কাছে পাওয়া গেলেও সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডই হতে পারে।