করোনা মহামারীতে এস ডি জি ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২০

নিজস্ব সংবাদদাতা: এস ডি জি ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে সমুদ্র দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টেকসই উন্নয়নে সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগানোর দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই।
আন্তর্জাতিক সমুদ্র দিবস ২০২০ উপলক্ষে, এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সদস্য কাজী সৌরভ আহমেদের উপস্থাপনায়, অনুষ্ঠানটিতে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, চট্টগ্রামের সল্টগোলাস্ত ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট এর সুযোগ্য অধ্যক্ষ, ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ব্লু গ্রীন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দীন মুন্না। দিবসটি পালনের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে সাগর-মহাসাগর সম্পদ এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং জ্ঞান বৃদ্ধি করা। সাগর-মহাসাগর পৃথিবীর ফুসফুস রূপে কাজ করে, পৃথিবীতে আমাদের মোট অক্সিজেনের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা হচ্ছে এই সাগর ও মহাসাগর। যার পরিমাণ প্রায় 60 শতাংশ। সমুদ্রের এই অবদান এবং প্রয়োজনে তাকে স্বতন্ত্র ভাবে পৃথিবীর সবার সামনে তুলে ধরার জন্য প্রতিবছর ৮ই জুন বিশ্ব সমুদ্র দিবস পালিত হয়।

সমুদ্র মানব গড়ার কারিগর, স্বাধীনতা মেরিনার্স পরিষদের সভাপতি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট এর সুযোগ্য অধ্যক্ষ, ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, বর্তমানে সামগ্রিক অর্থনীতির সম্প্রসারণ পূর্বের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় সমুদ্র নিরাপত্তা বৃদ্ধির ফলে তা সম্ভব হয়েছে। ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ তথা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় দায়িত্বপালনরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এবং কোস্টগার্ডের যুগোপযোগী বিভিন্ন সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগানোর বিকল্প কোন কিছু নেই। সরকার সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য বিভিন্ন রকম কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছেন। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ফায়সালা আজিমের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায়, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও সুনাম কুড়িয়েছে। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের সমুদ্রগামী নাবিকদের পৃথিবীর বিভিন্ন শিপিং কোম্পানিগুলোতে ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিম প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের সমুদ্রগামী নাবিকদের মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন, যার ফলে আমাদের ব্লু ইকোনমি খাত প্রতিনিয়ত উন্নত হচ্ছে।


বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ সমুদ্র অর্থনীতি এবং সমুদ্র সাক্ষরতা এই সমস্ত বিষয় গুলোর উপর দীর্ঘদিন যাবৎ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দীন মুন্না । তিনি বলেন, সারা পৃথিবী পৃষ্ঠের প্রায় শতকরা ৭১ ভাগেরও বেশি পানি আর মোট পানির ৯৭ ভাগেরও বেশি লবণাক্ত পানি, সাগর, মহাসাগর।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন পৃথিবীর সমস্ত জীবন-জীবিকার মূলে রয়েছে সমুদ্র যে অক্সিজেন আমাদের বেঁচে থাকার সহায়ক, সে অদ্বিতীয় গ্যাসটার ৬০ ভাগেরও বেশি যোগানদাতা হল সমুদ্রের ক্ষুদ্র ফাইটোপ্লাংটন ও সামুদ্রিক উদ্ভিদ। সমুদ্র আজ বিপন্ন, সংকটাপন্ন। যত্রতত্র দূষণ এবং সম্পদের অব্যবস্থাপনা অপরিকল্পিত আহরণ ও ব্যবহারে সাগর-মহাসাগর আজ হুমকির মুখে। তাই সমুদ্র সাক্ষরতার উপর মানুষের জ্ঞান এবং সচলতা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ডক্টর মুসলেউদ্দিন মুন্না সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন  বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে একটা সমুদ্র সচেতন সমাজ গঠন করতে হবে। একাডেমিক শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি সকল বয়সের ও সকল পেশার মানুষ কে সমুদ্র সাক্ষর করতে হবে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, স্কুল ও কলেজে ও সমুদ্র শিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সর্বোপুরি যে সকল গ্রাজুয়েট ওশানোগ্রাফি ও মেরিন সায়েন্স থেকে পাশ করে বের হচ্ছে তাদের যথাযথ ভাবে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সমুদ্র স্বাক্ষরতা এবং জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন ব্লু গ্রিন ফাউন্ডেশন এবং তার একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় ও তত্ত্বাবধানে সমুদ্র নগরী কক্সবাজারে রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড এ গড়ে তোলেন রেডিয়েন্ট ওশান রিসার্চ এন্ড এডুকেশন সেন্টার(ROREC) । এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সদস্য সহ অনেক অনুসারীরা এই ভার্চুয়াল মিটআপ সরাসরি সংযুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।