নারী নির্যাতনের ভুল তথ্যের কারনে বিব্রত কর্ণফুলী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এবং নাবিকরা

প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার: আজ দুই দিন যাবত এম.ভি কর্নফুলি-১৩ এর একটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় দৈনিকের পাতায় তোলপাড়! ঘটনার পর লাইট হাউসের তদন্তে উঠে এসেছে সত্য ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শী এবং জাহাজের নাবিকদের বর্ণনায় একটি মেয়ে তজুমদ্দিন ঘাট হতে লঞ্চ ছাড়ার কিছুদূর যাওয়ার পর লঞ্চ থেকে লাফ দেয়। ওরে এই ঘটনা তদন্তে বেরিয়ে আসলো, লঞ্চ থেকে লাফ দেওয়া মেয়েটি নিচতলার কেন্টিনের বাবুর্চি মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পূর্ব পরিচিত। মেয়েটি গিয়াসউদ্দিন এর নিকটাত্মীয়ের বাসায় কাজ করত। কিছুদিন পূর্বে ঐ বাসা থেকে টাকা এবং মোবাইল ফোন চুরি করে পালিয়ে আসে এবং দীর্ঘদিন কোনো খুঁজ ছিল না।

গত ০৪/৭/১৩ ইং তারিখে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চে উঠে নিচ তলার ডেকে বিছনা করে। তজুমদ্দিন ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার পর গিয়াস উদ্দিনের সাথে মেয়েটির সাথে দেখা হয়। গিয়াস উদ্দিন তাকে টাকা ও মোবাইলের কথা জিজ্ঞেস করিলে মেয়েটি তা স্বীকার করে। গিয়াস উদ্দিন তাকে লঞ্চে থাকতে বলে এবং যাদের টাকা ও মোবাইল চুরি করেছে তারা সকালে ঢাকার আসার কথা বলে সে তার কাজে চলে যায়। পরক্ষণেই বেলা ৬.১৫ মিনিটের সময় মেয়েটি ধরা খাওয়ার ভয়ে পিছন থেকে একটি মাছ ধরার ট্রলার দেখে ব্যাগ নিয়ে পানিতে লাফ দেয়।
তার লাফ দেওয়ার সাথে সাথেই লঞ্চের স্টাফ মোঃ সাদ্দাম লাইফ বয়া তার উদ্দেশ্য ছুড়ে মারে। মেয়েটি লাইফ বয়াটি ধরার চেষ্টা না করে মাছ ধরার ট্রলারটিতে উঠে যায়। মাষ্টারব্রীজে লঞ্চের মাস্টার কে অবহিত করলে মাষ্টার লঞ্চ টবের করে। লঞ্চটি টবের করার পরে ভাটিয়াল পানি,প্রচন্ড পুবালী বাতাস এবং সাইডে ব্লক থাকার কারনে জাহাজ ইচ্ছে করলেও মুহূর্তে পিছনে ঘুরানো সম্ভব না। কারন লঞ্চে প্রায় ৫০০ এর উপরে যাত্রী ছিল সবার জীবনতো আর মাষ্টার বিপদে ফালাতে পারে না। মাষ্টার টবের করা অবস্থায়ই যখন শুনল মেয়েটি একটি ট্রলারে উঠেছে তারপর উনি লঞ্চ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে এসেছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকা গুলো লঞ্চের স্টাফ দ্বারা যৌন হয়রানী করার কারনে ইজ্জত বাঁচাতে নদীতে ঝাপ দিয়েছে মর্মে নিউজ করে। লঞ্চের স্টাফ এবং কোম্পানীর নাম সাধারণ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। উক্ত লঞ্চে পাঁচশত যাত্রী থাকা সত্ত্বেও যদি তাই হয় তাহলে দিনের আলোতে লঞ্চে এত শত শত লোক কাউকে কিছু না বলে লঞ্চ থেকে ঝাপ দিবে কেন?
এ বিষয়ে কর্ণফুলী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলেন, আমাদের ৩৫ বছরের ব্যবসায়িক সুনাম নষ্ট করার জন্য কিছু নামদারী সাংবাদিক দ্বারা সত্য মিথ্যা যাচাই না করে একটি বানোয়াট সংবাদ প্রচার করে। আজ সকালে কেন্টিন বাবুর্চি গিয়াস উদ্দিন কে আমরা তদন্তের স্বার্থে তজুমদ্দিন থানার পুলিশের নিকট সোপর্দ করি। থানাতেই মেয়ে এবং গিয়াস উদ্দিন কে সামনা সামনি করলে মেয়েটি আসল ঘটনা স্বীকার করে।

কর্ণফুলী লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আরও বলেন, আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এর কোন মতামত না নিয়ে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য মূলক মনগড়া সংবাদ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।