বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্ব SWADS

প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার- Special Warfare Diving and Salvage সংক্ষেপে “SWADS” হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর Special Operations ForcE ।‌

শুরুতেই #সমুদ্রের_টাইগার খ্যাত এই #সোয়াডস কিভাবে গঠিত হলো সেই ইতিহাস জানা যাক। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই নৌবাহিনীতে বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত সৈন্য ছিল।যাদের ভিতর কিছু আমেরিকা থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত ছিলেন এবং তারা মুলত ট্রেনিং নিয়েছিলেন পাকিস্থান নৌবাহিনীতে থাকাকালীন।যাই হোক স্বাধীনতার প্রায় #৩৮_বছর পর্যন্ত নৌবাহিনীর ডেডিকেটেড কোনো স্পেশাল ফোর্স ছিল না।কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ের পথ চলায় নৌবাহিনী সর্বদা সমুদ্রে চোরাচালান রোধ,সমুদ্র নিরাপত্তা ও স্পেশাল অপারেশন চালানোর জন্য সোয়াডস এর মত একটি স্পেশাল কমান্ডো ইউনিট এর অভাব বোধ করেছে।

তাই অবশেষে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদ রক্ষা, সমুদ্রের অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে নিরাপধ করতে ২০০৯ সালে নৌবাহিনীতে #সোয়াডস
ইউনিট সংযুক্ত হয়।২ বছর আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এ ইউনিটকে এবং শুরুতে ১৫০ জন কমান্ডো এবং ২০০ জন আন্ডার ওয়াটার ডাইভারসহ মোট সাড়ে ৩শ’ নৌবাহিনীর সবচেয়ে মেধাবী এবং পরিশ্রমী সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সমুদ্রের নিরাপত্তায় কার্যক্রম শুরু করে সোয়াডস টিম।আর এভাবেই পথ চলা শুরু হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গর্ব SWADS।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ঈসা খা ঘাঁটির অপরপ্রান্তে সোয়াডসের ঘাঁটি নির্ভিক।নির্ভিক ঘাঁটি থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় সোয়াডসের অপারেশনাল কার্যক্রম।সোয়াডস মুলত গঠিত হয়েছে আমেরিকার বিখ্যাত Navy SEALs দের আদলে।তাই সোয়াডসদের ট্রেনিং SEALs Team এর মতই অত্যন্ত কঠিন।সোয়াডসরা Republic of Korea Navy UDT/SEALs, UK’s SAS & SBS, US Marine Force Recon, US Navy SEALS and Turkish SAT এর মত #বিশ্বসেরা_কমান্ডোদের থেকে ট্রেনিং লাভ করে।এছাড়া দেশেও এদের জন্য বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।এছাড়াও সারা বছর নানা ধরনের মহড়ার মাধ্যমে এরা আরো খুরধার কমান্ডো হয়ে ওঠে।তাই সোয়াডসকে টেনিং এর দিক থেকে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত কমান্ডো হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অস্ত্র হিসেবে এরা মুলত কোরিয়ান এবং আমেরিকান স্টান্ডার্ড অস্ত্র ব্যবহার করে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আমেরিকান M4 Carbine,দ.কোরিয়ান Daewoo K2 assault rifle,Daewoo K7 SMG,চাইনিজ Type-56-2,M-24 স্নাইপার রাইফেল,SR-25 #স্নাইপার_রাইফেল।

এছাড়াও এরা ৯ এমএম সেমি-অটোমেটিক পিস্তল,গ্রেনেড লঞ্চার,Level-III & Level-IIIA bulletproof vests,ballistic helmet,Night Vision System সহ নানা ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জাম ব্যবহার করে।এছাড়াও অত্যাধুনিক #দ্রুত_গতির_স্পিডবোটও দেয়া হয়েছে এদের।

সোয়াডস মূলত সন্ত্রাস দমন, চোরাচালান দমন, মাদকবিরোধী, বন্দী উদ্ধার ইত্যাদি অভিযান চালিয়ে থাকে।এছাড়াও #গোয়েন্দা_তথ্য সংগ্রহে বিশেষ অভিযানের জন্যও সোয়াডস বিশেষায়িত।জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত আছে সোয়াডসরা।চট্টগ্রাম বন্দর সহ দেশের অন্য সমুদ্রবন্দর গুলো এবং বন্দরে আসা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিরাপত্তা প্রদান করে সোয়াডস রা।হলি আর্টিজানে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সোয়াডস টিম গুলশানের লেক থেকে সাহায্য করেছিল।

সত্যি কথা বলতে গেলে সামরিক বাহিনীর সবথেকে #কৌশলগত অস্ত্রটি হলো কমান্ডো বাহিনী।তাই শান্তিকালিনতো বটেই যুদ্ধকালিন সময়েও সোয়াডস বাংলাদেশের অন্যতম ভরসার নাম।আমার একান্ত বিশ্বাস আমাদের যেকোনো শত্রুর চোখে চোখ রেখে,তাদের সাথে লড়াই করে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সম্পদ রক্ষা করতে এরা যেমন সক্ষম তেমনি শত্রুর এলাকায় যেয়ে তাদের নাস্তানাবুদ করাও এদের জন্য খুব একটা কঠিন কাজ হবে না।

তবে সোয়াডসকে আরো অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জাম সর্বরাহ করতে হবে।নিয়মিত মহড়া ও উন্নত ট্রেনিং এর মাধ্যমে এদেরকে আরো শানিত করতে হবে।সরকারও সোয়াডস এবং নৌবাহিনীর উন্নয়নে যথেষ্ঠ গুরত্ব দিচ্ছে।