মানবেতর জীবনযাপন করছে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন নাবিকরা

প্রকাশিত: ১১:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌযান গুলো রাতের বেলা হয়ে ওঠে ভুতুড়ে পরিবেশে । নেই কোন জেনারেটরের ব্যবস্থা, নেই পর্যাপ্ত সেফটি ইকুইপমেন্ট , নেই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলাচলরত আভ্যন্তরীণ বা কোস্টাল জাহাজ সমূহের নাবিকবৃন্দ সম্ভবত পৃথিবীর এক মাত্র প্রাণী, যারা এখনো বাংলাদেশের হারিকেন শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন।

আমাদের বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে, অথচ দেশের ৮০% পণ্য পরিবহনকারী নৌ সেক্টরের কোস্টাল বা অভ্যন্তরীণ নাবিকগণ গরমকালে কেবিনে প্রবেশ করতে পারেনা‌ । বাহিরে মশা ভিতরে গরম, গরমে অতিষ্ঠ হয়ে রাত্র ২/৩ টা পর্যন্ত নাবিকগণ জাহাজের ডেকে বিছানা করে ঘুমাতে হয়, ডেকে ডেকে হাঁটতে হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে লাইট হাউস কে অভ্যন্তরীণ নৌযান এর প্রথম শ্রেণীর ইঞ্জিন চালক আবদুল্লাহ বলেন, যেখানে বহির্বিশ্বে অভ্যন্তরীণ একটি ছোট্ট জাহাজও শতভাগ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত থাকে। আর বাংলাদেশের চার হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি জাহাজেও এখনও হারিকেন ঘষামাজা করতে হয়! আসলে সত্যিই অবাক করে সবাইকে। অভ্যন্তরীণ নৌযান সার্ভেয়ার দের এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, যে অন্তত নাবিকদের জাহাজে আবাসনের শতভাগ নিশ্চিত সুযোগ-সুবিধা পায় ।‌ যেখানে একজন নাবিক সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে সুন্দরভাবে জাহাজে চাকরি করতে পারে ।
অভ্যন্তরীণ নৌযান এর প্রথম শ্রেণীর ইঞ্জিন চালক আবদুল্লাহ বলেন, আমার জানামতে দেশে একজন ভিক্ষুকের ঘরেও বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা আছে। বলা যায়, দেশের ৯৯% মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে। আর বাকি ০১% আমরা আজব প্রানী, দিনেরাতে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে রুমে গিয়ে গরমের জন্য ঠিক মত ঘুমাতে পারিনা।

অভ্যন্তরীণ নৌ যানের প্রথম শ্রেণীর ইঞ্জিন চালক  আব্দুল্লাহ ডিজি শিপিংকে অনুরোধ জানাবো জাহাজ সার্ভের অনান্য শর্তের সাথে এই একটা শর্ত যোগ করা হোক, অন্তত সোলার প্যানলে পদ্ধতির মাধ্যমে হলেও ছোট্ট একটা ডি সি ফ্যান যেন সবাই ব্যবহার করতে পারে।

নাবিকগণ বছরের ১২মাসই একেক সময় একেকটি প্রাকৃতিক দূর্যোগের মোকাবিলা করে এবং বছরের বিভিন্ন সময়ে ঝড় বন্যা খরা মাথায় নিয়ে দেশের ৮০ শতাংশ পণ্য এই নৌযান নাবিকগণ নৌ সেক্টরে নৌযান চালিয়ে এক বন্দর থেকে অন্য বন্দরে স্থানান্তরিত করে নৌ শিল্পকে গতিশীল রেখেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে, বৈশ্বিক মহামারির সময়ে পুরো দেশ যখন লকডাউনে তখনো কিন্তু নাবিকগণ থেমে নেই। যদিও করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদির অভাবোনুভব। যারা নিজেদের জীবনবাজী রেখে জুন জুলাই মাসের (কথিত হাবিয়া জাহান্নাম) বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙের সাথে সংগ্রাম করে কোম্পানির সম্পদ রক্ষা করে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে তাদেরকে সামান্য খরচে প্রত্যেক জাহাজে ছোট জেনারেটর বা সৌর বিদ্যুৎ পদ্ধতি ব্যবস্থা চালু করে দিলেও নাবিকগণ একটু স্বস্তিতে ঘুমাতে পারে এবং কোস্টাল নাবিকরা আশা করে বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে শীঘ্রই আইনি পদক্ষেপ নেবে।