সু চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন মাস্টার জামশেদ

প্রকাশিত: ১০:৫৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

মোঃ মুজিবুল হক- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন এর, ভারত গামী সী পেন্টাল জাহাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মাস্টার জনাব মোহাম্মদ জামশেদ আমাদের মাঝে আর নেই। গত কিছুদিন আগে বাংলাদেশ হইতে পণ্য নিয়ে ভারতে যান, সেখানে তিনি প্রথম হার্ট স্ট্রোক করেন এবং পুনরায় ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে সুন্দরবনের ভিতর পুনরায় স্টোক করেন, পরবর্তীতে তাকে সুন্দরবন হইতে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয় এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কোস্টাল মাস্টার মরহুম জনাব জামশেদ এর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার, মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানা অধীন 6 নং ইছাখালী ইউনিয়নের উত্তর ভূঁইয়া গ্রামে। বাংলাদেশ আভ্যন্তরিন নৌযানে চাকুরীরত ইঞ্জিন চালক মোঃ আমান উল্যাহ বলেন, আমরা দেশের ক্রান্তিলগ্নে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখা নাবিকরা কত অসহায় হয়ে পড়েছি ! ভারতে জাহাজ নিয়ে প্রথমবার যখন জামশেদ মাষ্টার ষ্ট্রোক করেনঃ এজেন্ট এবং মালিক কর্তৃপক্ষ ভালো কোন সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে নাই। নিজ খরচে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাংলাদেশ রওয়ানা করার পথিমধ্যে সুন্দরবন এর ভিতর অবস্থার আরো অবনতি হলে জাহাজের ইঞ্জিন চালক ও কোয়ার্টার মাষ্টার অসুস্থ জামশেদ মাষ্টারকে নিয়ে বাংলাদেশের বর্ডার দিয়ে খুলনা জেলার কয়রা থানাধীন আংটিহারা চেকপোস্টে আসলে বিস্তারিত জানতে পারি এবং সেখান থেকে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও বি আই ডব্লিউ টি এ এর পাইলট এবং উপস্থিত জাহাজের নাবিকদের সার্বিক সহযোগীতায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসতাপালে ভর্তি করলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি আরো বলেন- আমরা নাবিকরা চিকিৎসার অভাবে এভাবে যন্ত্রনা ভোগ করতে করতে আর কতো প্রান দিবো? সংবাদমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে আমরা নাবিকরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা নাবিকরা যদি দেশের ক্রান্তিলগ্নে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের ৮০% পন্যসামগ্রী নৌ-পথে পরিবাহিত করতে পারি তাহলে আমরা নাবিকের জন্য বন্দরে বর্ডারে ভাসমান হাসপাতাল ক্লিনিক প্রতিস্থাপিত করতে পারবে না কেন এবং কেনো থাকবেনা নাবিকদের জন্য এম্বুলেন্স ব্যবস্থা। আর কত নাবিক চিকিৎসার অভাবে এবং হাসপাতালে নিতে নিতে মৃত্যু হবে? জামশেদ মাস্টারের মৃত্যুতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন নাবিকদের মাঝে এক শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কোস্টাল জাহাজের মাস্টার এম এ রহমান এবং তার সহকর্মীরা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।